যক্ষা কি?
যক্ষা (টিবি বা Tuberculosis) একটি বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ যার ফলে প্রতিদিন বিশ্বে ৪ হাজার ১০০ জনের বেশী মানুষ মারা যায়। এই রোগের জীবাণু প্রধানত ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। তবে ফুসফুস ছাড়াও এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, প্রজননঅঙ্গ এবং হাড়সহ দেহের বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে বাতাসে নির্গত হয়ে বায়ু মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে।
যক্ষা রোগের কারণ
যক্ষা একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ।এই রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যকটেরিয়া হলো Mycobacterium tuberculosis. এই রোগ আক্রান্ত ব্যক্তির কফ,থুথু,হাঁচি, কাঁশির মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রমিত করে।
যক্ষা রোগের লক্ষণ
যক্ষা রোগ হলে ৮০% ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসে সংক্রমণ হয় তবে পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অংশ (যেমন: মস্তিস্ক ও মেরুদণ্ড) সংক্রমিত হয়।যক্ষা রোগের বেশীরভাগ সংক্রমণেই তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়না,যা সুপ্ত যক্ষা নামে পরিচিত।তবে ভালো দিক হলো এই সুপ্ত সংক্রমিতের মাত্র ১০% সক্রিয় যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়। যেসব ব্যক্তি ডায়াবেটিস, এইচআইভি, করোনা, কিডনির রোগী কিংবা অপুষ্টিতে ভোগে অথবা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করে তাদের যক্ষায় আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশী। এছাড়াও প্রেগন্যান্ট মহিলা, পাঁচ বছরের চেয়ে কম বয়সী শিশু অথবা ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি, কেমোথেরাপি কিংবা লম্বা সময় যাবৎ স্টেরয়েডজাতীয় ঔষধ সেবন করছেন এমন ব্যক্তিরও যক্ষায় আক্রান্ত হবার সম্ভবনা বেশী।
ফুসফুসে সংক্রমণে সক্রিয় যক্ষার লক্ষণসমূহ
-
-
- তিন সপ্তাহ বা তার অধিক সময় ধরে কাশি।
- কাশির সাথে রক্ত বা শ্লেষ্মা বের হওয়া।
- বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট বা কাশির সাথে ব্যথা অনুভব করা।
- অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস হওয়া।
- স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী ক্লান্তি অনুভব করা।
- জ্বর হওয়া।
- রাতের ঘাম হওয়া।
- ঠাণ্ডা লাগা।
- ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া।
-
শরীরের অন্যান্য অংশে সংক্রমণের লক্ষণসমূহ
-
-
- শরীরের যে স্থান যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হবে সে স্থান ফুলে উঠবে, ব্যাথা অনুভূত হবে। যদি গলায় সংক্রমণ ঘটায় তবে গলার অংশটি ফুলে যাবে এবং ব্যাথা হবে।
- লিভারে সংক্রমণ ঘটলে পেটে পানি চলে আসে এবং পেট অস্বাভাবিকহারে ফুলে থাকে।
- মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটলে মস্তিষ্কে ইডিমায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায়।যা ভয়াবহ অবস্থা তৈরী করতে পারে।
-
যক্ষা রোগ কিভাবে ছড়ায়
সুপ্ত যক্ষা যেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ করেনি তেমনি এটি কোনো নতুন সংক্রমণও ঘটায়না। তবে সক্রিয় যক্ষা থেকে সংক্রমণ ঘটে।যক্ষা যেহেতু বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ তাই আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যক্তির কাঁশি, থুথু, হাঁচি কিংবা কথা বলার সময় নির্গত লালা কণার মাধ্যমে জীবাণু শরীর থেকে নির্গত হয়ে বায়ুতে মিশে আশেপাশের ব্যক্তিদের সংক্রমিত করে।
আরও পড়ুন : নিউমোনিয়া কি প্রাণঘাতি? আজই নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করুন।
যক্ষা রোগের চিকিৎসা
যক্ষা ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট মাত্রার এন্টিবায়োটিক ঔষধ নির্দিষ্ট মেয়াদে সেবনের দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে থাকা যক্ষ্মার জীবাণু ধ্বংস হয়।তবে নিয়ম মেনে নিয়মিতভাবে এই ঔষধ সেবন না করলে কিংবা মাঝপথে ঔষধ নেওয়া বন্ধ করে দিলে অথবা সঠিক মাত্রায় ঔষধ সেবন না করলে দায়ী ব্যাকটেরিয়া ওষুধের বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার ক্ষমতা অর্জন করে যা ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি (এমডিআর- টিবি) নামে পরিচিত। এমডিআর টিবি হলে সাধারণ নিয়মে ওষুধ সেবনে নিস্তার মিলবেনা।
একসময় সাধারণ যক্ষ্মার রোগীকে সঠিক নিয়মে সঠিক মাত্রায় ছয় মাস টানা ঔষধ সেবন করতে হতো। আবার ঔষধ সেবনের কোনো ভুলের দরুণ এমডিআর-যক্ষ্মা হলে রোগীকে টানা ২৪ মাস ওষুধ সেবন করে যেতে হতো।যার প্রথম ০৬-০৮ মাস রোগীকে দৈনিক একটি ইনজেকশনের পাশাপাশি চার ধরনের ওষুধ সেবন করতে হতো এবং পরবর্তী ১৬-১৮ মাস দৈনিক চার পদের ওষুধ সেবন করতে হতো।
তবে বাংলাদেশে উদ্ভাবিত বর্তমান চিকিৎসাপদ্ধতি (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত) অনুযায়ী চিকিৎসা শুরুর প্রথম চার মাস দৈনিক একটি ইঞ্জেকশনসহ ছয় ধরনের ঔষধ সেবন করতে হয় এবং শেষ পাঁচ মাস দৈনিক চারটি ওষুধ সেবন করতে হয় যার ফলে মাত্র নয় মাসেই এমডিআর টিবি রোগী সুস্থ হয়ে যায়।
যক্ষা কত প্রকার
যক্ষা রোগ হলেই আপনার শরীরে কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হবে কিংবা আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন বিষয়টি এমন না। যক্ষা রোগের সংক্রমণ ও লক্ষণ প্রকাশের উপর ভিত্তি করে যক্ষা রোগ দু ধরণের হয়ে থাকে।
১.সুপ্ত যক্ষা
সুপ্ত যক্ষার বিষয়টি হচ্ছে এমন যে আপনার শরীরে যক্ষা রোগের জীবাণু থাকবে কিন্তু তা আপনাকে অসুস্থ করবেনা,কোনো লক্ষণ প্রকাশ করবেনা কিংবা নতুন কাওকে সংক্রমিতও করবেনা কেননা দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম এর বংশবৃদ্ধি কিংবা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। সুপ্ত অবস্থায়ও যক্ষার জীবাণু অনেকদিন আপনার শরীরে জীবিত থাকতে পারে এবং তা সক্রিয় যক্ষায় রূপ নিতে পারে।
২. সক্রিয় যক্ষা
সক্রিয় যক্ষা রোগে আক্রান্ত হলে অসুস্থতা অনুভূত হতে থাকবে,যক্ষার বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ হতে থাকবে, শরীরে জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে থাকবে। সক্রিয় যক্ষা রোগই মূলত নতুন সংক্রমণের জন্য দায়ী।প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে ৯০% সক্রিয় যক্ষাই সুপ্ত যক্ষা থেকে আসে। লক্ষণ বোঝামাত্র টেস্ট করিয়ে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা নিতে হবে।
আরও পড়ুন : জন্ডিস এর লক্ষণ ও জন্ডিস হলে করনীয় কী?
যক্ষার টেস্ট
বর্তমান সময়ে যক্ষা রোগ নির্ণের জন্য বিভিন্ন ধরণের টেস্ট বিদ্যমান যেমন:
- জিন টেস্ট
- টিস্যু কালচার টেস্ট
- স্মিয়ার টেস্ট
- এমটি টেস্ট
- স্পুটাম টেস্ট
- এক্স-রে
- সিটি স্ক্যান
- এফএনসি টেস্ট প্রভৃতি।
যক্ষা রোগের টেস্ট করার জন্য নমুনা হিসেবে রোগীর কফ, থুথু, লালা কিংবা রক্ত ব্যবহার করা হয়।
যক্ষা হলে করণীয়
উপরে আলোচিত লক্ষণগুলো কোনো ব্যক্তির শরীরে প্রকাশিত হলে সাথে সাথে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। অতঃপর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে যক্ষার জীবাণু ওই ব্যক্তির শরীরে উপস্থিত কিনা। সময়মত সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে যক্ষা রোগ পুরোপুরি ভালো হয় তবে এক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ঔষধ সেবন করা আবশ্যক। যক্ষার জীবাণুর মাত্রা অনুযায়ী আপনার জন্য নির্ধারিত ঔষধের মাত্রা অনুযায়ী নিয়মমতো ঔষধ সেবন না করলে যক্ষার ঔষধ আপনার শরীরে কোনো কাজ করবেনা বরং আপনি তখন ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষা রোগ দ্বারা আক্রান্ত হবেন। যার চিকিৎসা আর দীর্ঘ। তাই যক্ষা রোগ হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মমতো সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে ঔষধ সেবন চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
যক্ষার ঔষধ ও ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যক্ষার বেশকিছু ওষুধের মধ্যে রয়েছে :
১। আইসোনিয়াজিড
২। রিফামপিন (রিফাডিন, রিমাকটেন)
৩। ইথামবিউটল (মায়ামবিউটল)
৪। পাইরাজিনামাইড
প্রত্যেক ওষুধের ন্যায় যক্ষার ঔষধেরও বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তার উপর এইসব ঔষধ একটা সুদীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিতভাবে সেবন করতে হয়।
পার্শপ্রতিক্রিয়াসমূহ হলো-
- হাত – পা অসাড় হয়ে যেতে পারে কিংবা কাঁপুনি দেখা দিতে পারে।
- পেট খারাপ,বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে।
- ক্ষুধা হ্রাস পেতে পারে।
- শরীরে দুর্বলতা অনুভব হতে পারে।
- মাথাব্যথা হতে পারে।
- শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা কিংবা ফোলা দেখা যেতে পারে।
- শরীরের কোনো কোনো অংশের চামড়ায় ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
- মানসিক অস্থিরতা হতে পারে। কানে সমস্যা হতে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
যক্ষা রোগের প্রতিষেধক টিকা
ব্যাসিলাস ক্যালমেট- গুয়েরিন (বিসিজি) নামের এই টিকাটি যক্ষা রোগের প্রতিষেধক টিকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যক্ষা রোগের বেশী প্রাদুর্ভাবসম্পন্ন দেশগুলোতে সুস্থ শিশু জন্মের পর নিকটতম সময়ের মাঝে এই টিকাটি দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। তবে এইডস আক্রান্ত শিশুদের এই টিকা দেয়া উচিত নয়।
যেসব প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের যক্ষা নেই এবং আগে টিকা দেওয়া হয়নি কিন্তু মাঝেমধ্যে কিংবা ঘনঘন ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষা (এমডিআর) রোগীর সংস্পর্শে আসা হয় , তাদেরকেও এই টিকা দেওয়া যেতে পারে।
যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা হিসাবে এন্টিব্যকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণই হলো একমাত্র পদ্ধতি যা এই রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য পেতে সহায়তা করে।এন্টিব্যকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হলো
১.রসুন – রসুন রয়েছে সালফার যা যক্ষার জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে।
২.আনারস – প্রাকৃতিকভাবে টিবির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
৩.কমলা – এতে থাকে ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট যা টিবি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৪.পুদিনা – ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
৫.কলা -অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস হওয়া কমায়।
৬.দুধ – এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়তা করে।
৭.গ্রিণ টি – টিবি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৮.কালো মরিচ – এতে থাকা এন্টিফ্লেমেটোরি উপাদান ফুসফুস পরিষ্কারে সহায়তা করে,কফ ও ব্যাথা কমায়।
৯.লাউ – শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
১০.আমলা – সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এটি অবদান রাখে।
১১.ভিটামিন ডি – ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি বাধা দেয়।
আরও পড়ুন : সাপে কাটলে কী করনীয়?
যক্ষা রোগীর খাবার তালিকা
যক্ষা আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার তালিকায় সুষম খাবার রাখা আবশ্যক। সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত খাবারগুলো তালিকায় রাখা উত্তম-
যেসব খাবার খেতে হবে
১.শাক-সবজি ও ফল-মূল
২.দুধ কিংবা দুগ্ধজাত পণ্য
৩.মাছ মাংস ও ডিম
৪.তেল,চর্বি, বাদাম কিংবা তেলের বীজ
৫.ক্যারোল,বাজরা ও ডাল
যেসব খাবার একবারে পরিহার করতে হবে
১.মাদকজাতীয় দ্রব্য
২. চা কফি জাতীয় খাবার
৩.তামাক জাত দ্রব্য
৪. অতিরিক্ত মশলা বা লবণ সমৃদ্ধ খাবার।
যক্ষা রোগীর যত্ন
হাঁচি-কাশির সময় মুখে রুমাল বা টিস্যু দেওয়া তবে এসব না থাকলে কমপক্ষে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বা বেশ কিছু দূরে গিয়ে হাঁচি বা কাশি দেয়া। যত্র-তত্র কফ /থুথু না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে জায়গাটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলা কিংবা মাটি চাপা দেয়া। কারও সরাসরি মুখের সামনে গিয়ে কথা না বলা। যক্ষা রোগীর শরীরে আক্রান্ত স্থানে কোনো সুস্থ ব্যক্তির কাটা অংশ না নেয়া।
সুষম খাবার গ্রহণ করা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকা ও চলাফেরা করা। থ্রিএইচটি নামক প্রতিরোধক থেরাপির মাধ্যমে যক্ষার জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে রিফাপেন্টিং নামে একটি ওষুধ প্রতিমাসে একবার করে তিন মাস সেবন করতে হয়।
Frequently Asked Questions (FAQs)
প্রশ্ন : যক্ষার জীবাণু আবিষ্কার করেন কে ?
উত্তর : জার্মান চিকিৎসক ও মাইক্রোবায়োলোজিস্ট ড. রবার্ট কোচ, ১৮৮২ সালের ২৪ মার্চ Mycobacterium tuberculosis নামক ব্যক্টেরিয়া আবিষ্কারের ঘোষণা দেন।
প্রশ্ন : যক্ষা কি ছোঁয়াচে রোগ ?
উত্তর : না, যক্ষা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়; যক্ষা একটি সংক্রামক রোগ। অর্থাৎ যক্ষা আক্রান্ত রোগীর স্পর্শে কেও আক্রান্ত হবেনা তবে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি,কাশি,থুথু কিংবা কফের মাধ্যমে নির্গত জীবাণু দ্বারা অন্য কেও সংক্রমিত হবে।
প্রশ্ন : যক্ষা রোগের জীবাণুর নাম কি ?
উত্তর : যক্ষা রোগের জন্য দায়ী হলো একটি ব্যকটেরিয়া যা হলো Mycobacterium tuberculosis.
প্রশ্ন : যক্ষা রোগের প্রতিষেধক টিকার নাম কি ?
উত্তর : ব্যাসিলাস ক্যালমেট- গুয়েরিন (বিসিজি) নামের এই টিকাটি যক্ষা রোগের প্রতিষেধক টিকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন : যক্ষা কি ভালো হয় ?
উত্তর : যক্ষা একটি সংক্রামক রোগ যা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।তবে সঠিক ও নিয়মিত চিকিৎসায় যক্ষা ভালো হয়। যক্ষা রোগের চিকিৎসা হিসেবে দীর্ঘ সময় (প্রায় ৬-৯ মাস) রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনের দ্বারা যক্ষা ভালো হয়।
প্রশ্ন : যক্ষা কী বাহিত রোগ ?
উত্তর : যক্ষা একটি বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ যা আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই রোগের জীবাণু আক্রান্ত ব্যক্তির কাঁশি, থুথু, হাঁচি কিংবা কথা বলার সময় নির্গত লালা কণার মাধ্যমে বের হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে যায় যার দরুণ অন্য ব্যক্তি সহজে সংক্রমিত হতে পারে।
Disclaimer :এ ওয়েবসাইটে দেওয়া সকল তথ্য শুধুমাত্র জানার জন্য। রোগীকে সরাসরি না দেখে এবং রোগীর পরীক্ষা না করে রোগ এবং রোগের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাবেন না। অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
References
- Tuberculosis – Symptoms & causes
- Tuberculosis: Causes, Symptoms, Treatment & Prevention
- Tuberculosis