সিফিলিস কি ?
সিফিলিস ( Syphilis) যাকে বাংলায় ফিরিঙ্গি রোগ বা গর্মি রোগ বলে।এটি একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রামক রোগ যা যৌন কাজের দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে। সিফিলিস রোগের সংক্রমণ সাধারণত যৌনাঙ্গ, মুখ কিংবা মলদ্বারে হয়ে থাকে,প্রাথমিকভাবে এসব অঙ্গে ব্যাথাহীন ঘা দেখা দেয় যা ওষুধের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য। তবে সময়মতো সঠিক চিকিৎসার অভাবে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, পেশী, হাড়, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মারাত্নক ক্ষতিসাধন করে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
সিফিলিস রোগের জীবাণু
সিফিলিস রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী হলো একটি ব্যকটেরিয়া যার নাম ট্রিপোনেমা পল্লিডাম (Treponema pallidum ).
সিফিলিস কেন হয়
সিফিলিস রোগটি হয় মূলত একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। এটি একটি যৌনবাহিত ছোঁয়াচে রোগ। একজন আক্রান্তের সাথে যৌন সম্পর্কের দ্বারা অন্য ব্যক্তিও সংক্রমিত হয়।
সিফিলিস কিভাবে ছড়ায়
সিফিলিস একটি সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজেস (STD) অর্থাৎ যৌন কাজের মাধ্যমে এই রোগ বিস্তার লাভ করে। আক্রান্ত ব্যক্তির শিশ্ন, যোনি, পায়ূ বা ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নতুন ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ লাভ করে।
সিফিলিস রোগের লক্ষণ
প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসের সুপ্তিকাল ১৪-২১ দিন। প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসে যৌনাঙ্গ, মুখ, মলদ্বার বা ত্বকে ব্যাথাহীন ঘা বা আলসার হয় যা চ্যাঙ্কার নামে পরিচিত। প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিস ৩-৬ সপ্তাহের মাঝে এমনিই সেরে যায়। এ পর্যায়ের সিফিলিস সেরে উঠলেও শরীরে ব্যাকটেরিয়া ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আগ পর্যন্ত সামান্য কিছু উপসর্গ দেখায়। তাই প্রাথমিক সিফিলিসের লক্ষণ বোঝামাত্র ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রাথমিক সিফিলিসের ৪-৮ সপ্তাহ পর মাধ্যমিক সিফিলিস শুরু হয়।
এ পর্যায়ের সিফিলিসের লক্ষণসমূহ হলো:
- মুখের ভেতর, যৌনাঙ্গ, ত্বকের ভাঁজ, হাতের তালু কিংবা পায়ের তলায় লালচে-বাদামী চুলকানিহীন ফুসকুড়ি কিংবা তরল ভরা ফোস্কা দেখা দিবে।
- শরীরে অসুস্থতা অনুভব হবে যেমন: হালকা জ্বর,ক্লান্তি, পেশীব্যথা কিংবা মাথাব্যথা ইত্যাদি।
- ক্ষুধা হ্রাস পাবে।
- গলায় ফোলা লিম্ফ নোড দেখা যায় এবং ব্যথা হয়।
- দৃষ্টি শক্তি কমে যায়।
- মাথার চুল ও ভ্রু পড়ে যেতে থাকে।
মাধ্যমিক সিফিলিসও এমনিই সেরে যায়। তবে যারা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক সিফিলিস সাধারণত চিকিৎসা ছাড়াই সমাধান করে তাদের শরীরে এই সময়ের মাঝে সিফিলিস সুপ্ত হয়ে যায় এবং অনেক বছর ধরে তাদের শরীরে সিফিলিসের কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। তবে খারাপ বিষয় হলো এই সময়ের মাঝে, এটি টারশিয়ারি সিফিলিসের দিকে ধাবিত হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলির মারাত্নক ক্ষতি করতে পারে।
টারশিয়ারি সিফিলিস চিকিৎসা না করা লোকেদের মধ্যে বিকাশপ্রাপ্ত হয়। এ পর্যায়ের সিফিলিসের লক্ষণগুলি নির্ভর করে শরীরের কোন অঙ্গগুলি প্রভাবিত হয়েছে তার উপর। এ পর্যায়ের সিফিলিস নির্ণয় করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে কেননা এই ব্যাকটেরিয়া পরিবর্তিত হতে পারে।
অঙ্গভেদে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তা হলো-
- হার্টের ক্ষতি
- অ্যানিউরিজম বা ভালভ রোগ সৃষ্টি
- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি (নিউরোসিফিলিস)
- ত্বক, হাড় বা লিভারের টিউমার
আরও পড়ুন : নিউমোনিয়া কি প্রাণঘাতি? আজই নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করুন।
সিফিলিস এর ধাপ গুলো কি কি ?
সিফিলিস চারটি আলাদা আলাদা পর্যায়ের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করতে পারে। পর্যায় চারটি হলো:
১. প্রাথমিক সিফিলিস
২. মাধ্যমিক সিফিলিস
৩. সুপ্ত সিফিলিস
৪. টারশিয়ারি সিফিলিস
এই চারটি পর্যায়ের মাঝে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সিফিলিস খুবই সংক্রামক কেননা এই দুই পর্যায়ের সিফিলিস খুব সহজেই তাদের যৌন অংশীদারদের মাঝে বিস্তার লাভ করে।
এবার এই চারটি পর্যায়ের সিফিলিস বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১. প্রাথমিক সিফিলিস
প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিস সাধারণত কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার দুই (০২) থেকে বারো (১২) সপ্তাহ পরে তার উপসর্গ প্রকাশ করে। এ পর্যায়ে সিফিলিসে উপসর্গ হিসাবে আপনার যৌনাঙ্গে বা মুখে একটি মসৃণ, ছোট, শক্ত এবং ব্যথাহীন ঘা হয় যা চ্যাঙ্কার নামে পরিচিত। এটি এতোটাই ছোট হয় যে অনুভবও হয়না সেখানে কিছু হয়েছে। যদি বোঝা যায় তবে সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধের দ্বারা ভালো করা যায়।ওষুধের দ্বারা সুস্থ হওয়া মানে আপনি সিফিলিস মুক্ত। তবে এই ঘা তিন (০৪) থেকে ছয় (০৬) সপ্তাহের মাঝে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সেরে যায়। তবে এর মানে এটা নয় যে আপনি এখন সিফিলিস থেকে মুক্ত।বরং প্রাথমিক সিফিলিসের এই চিকিৎসাহীন সেরে যাওয়া হলো মাধ্যমিক পর্যায়ের সিফিলিসের অন্তরায়।প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিস আক্রান্ত ব্যক্তির শিশ্ন, যোনি, পায়ূ বা ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নতুন ব্যক্তির শরীরে বিস্তার লাভ করে।
২. মাধ্যমিক সিফিলিস
প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসের ঘা সেরে উঠার প্রায় এক (০১) থেকে ছয়(০৬) মাস পরে হাতের তালু,পায়ের তলা কিংবা সারা শরীরে রুক্ষ, আঁশযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।এসব ফুসকুড়ি তে কোনো জ্বালাপোড়া কিংবা চুলকানি হয়না। মাধ্যমিক পর্যায়ের সিফিলিসে আরোও কিছু উপসর্গ দেখা দেয় যেমন – জ্বর,পেশী ব্যথা,মাথাব্যথা, ক্লাম্তি, চুল পড়া, গলা ফোলা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
এ পর্যায়ের সিফিলিসও এমনিই ভালো হয় তবে চিকিৎসাহীন এই ভালো হওয়া আপনাকে সুপ্ত সিফিলিসের দিকে ধাবিত করবে।
এ পর্যায়ের সিফিলিসও শিশ্ন,যোনি বা ওরাল সেক্সের মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমিত করে।
৩. সুপ্ত সিফিলিস
যদি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সিফিলিসে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না হয় তবে সিফিলিসের সংক্রমণটি সুপ্ত পর্যায়ের সিফিলিসে চলে যায়। এ পর্যায়ের সিফিলিস ২০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।এই পর্যায়ের সিফিলিসের বাহ্যিক কোনো উপসর্গ দেখা দেয়না। সুপ্ত পর্যায়ের সিফিলিস আক্রান্তের হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও হাড়ের ক্ষতি করে। চিকিৎসা না করলে সুপ্ত পর্যায়ের সিফিলিস টারশিয়ারি পর্যায়ের সিফিলিসের রূপ নেয়।
৪. টারশিয়ারি সিফিলিস
সুপ্ত পর্যায়ের সিফিলিসের পরে ৮০ ভাগ লোকের ক্ষেত্রে আর অগ্রসর হয়না কেননা সংক্রমণ এমনিই নিরাময় হয়। তবে বাকী 20% আক্রান্তদের ক্ষেত্রে সুপ্ত সিফিলিস টারশিয়ারি পর্যায়ে অগ্রসর হয়, যা শরীরে বিভিন্ন গুরুতর সমস্যা যেমন: মস্তিষ্কের ক্ষতি, ডিমেনশিয়া, হৃদরোগ. পেশীর সমস্যা, শরীরের যেকোনো অংশ প্যারালাইজড, স্নায়ুর সমস্যা, খিঁচুনি এবং অন্ধত্বসহ আরোও সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন : ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর চিকিৎসা
সিফিলিস টেস্ট
সিফিলিস টেস্ট করার জন্য মূলত ত্বকীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়। নিমোক্ত পদ্ধতিতে সিফিলিস টেস্ট করা হয়।
২. ইমিউনোহিস্টোকেমিক্যাল অ্যাস
৩. খরগোশ সংক্রমণ পরীক্ষা
৫. নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যামপ্লিফিকেশন অ্যাস
একয়েকটি ছাড়াও ভিন্ন কিছু পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে সিফিলিস নির্ণয় করা যেতে পারে যেমন: সিলভার-স্টেনিং এবং সরাসরি ফ্লুরোসেন্ট অ্যান্টিবডি স্টেনিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসে চ্যাঙ্কার নমুনা সনাক্ত করা যেতে পারে।
সিফিলিস এর চিকিৎসা
সঠিক চিকিৎসায় সিফিলিস প্রাথমিক পর্যায়েই নিরাময় করা যায়। তবে দীর্ঘ সময় যাবৎ চিকিৎসা না করিয়ে রেখে দিলে এই রোগের ব্যাকটেরিয়া আপনার হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, রক্তনালী ও স্নায়ুতন্ত্রের মারাত্নক ক্ষতি সাধন করতে পারে। কিছু গবেষণায় এমনটাও পাওয়া গিয়েছে যে দীর্ঘদিন এই রোগের চিকিৎসা না নিলে ইহা এইডস রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আপনি সিফিলিসে আক্রান্ত হলে খুব সহজে এবং আপনার অজান্তেই আপনার যৌন সঙ্গীও আক্রান্ত হয়ে পড়বে।
সিফিলিসের জন্য প্রকৃত চিকিৎসা হলো এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন। আক্রান্ত হওয়ার বয়স এক বছরেরও কম হলে পেনিসিলিন এর একটি মাত্র ইনজেকশন নিলেই হবে।তবে এক বছরেরও বেশী সময় ধরে আক্রান্ত হয়ে থাকলে আপনাকে পেনিসিলিন ইনজেকশনের কয়েকটি ডোজ নেওয়া লাগতে পারে। অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিবেন।
সিফিলিস রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
সিফিলিস একটি মারাত্মক যৌনবাহিত রোগ। এই রোগের কোনো ঘরোয়া চিকিৎসা হয়না। এটি যেহেতু একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ তাই সিফিলিস রোগের একমাত্র ভরসাযোগ্য চিকিৎসাই হলো এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন ইনজেকশন। ঘরোয়া চিকিৎসা কখনো এই রোগের পেশাদার চিকিৎসার বিকল্প হতে পারেনা। তবে আপনি চাইলে হোমিও চিকিৎসা নিতে পারেন।
সিফিলিস রোগের ছবি
সিফিলিস এর ঔষধ কি
সিফিলিস রোগের ঔষধ হিসেবে “বেনজাথিন পেনিসিলিন জি (Benzathine Penicillin G)” ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য এই একটি ইনজেকশনই কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। তবে সুপ্ত সিফিলিস কিংবা আক্রান্ত সময়কাল না জানা সাপেক্ষে এই ইনজেকশনের কয়েকটি ডোজ নেওয়া লাগতে পারে।
সিফিলিস হলে করণীয়
সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসার পাশাপাশি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলতে পারেন-
- সংক্রমণের বিস্তার কমাতে নিরাপদ যৌন অভ্যাস তৈরী করা।
- প্রচুর পরিমাণে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ।
- খাদ্য তালিকায় ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি রাখা। যেমন: কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি , গাজর, মাশরুম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, পেঁয়াজ এবং রসুন
- প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া।
- মাদকদ্রব্য বর্জন করা।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
আরও পড়ুন : দ্রুত বীর্যপাতের কারন, চিকিৎসা ও ঔষধ
সিফিলিস ও গনোরিয়া রোগের পার্থক্য
সিফিলিস এবং গনোরিয়া দুটোই ব্যাকটেরিয়াল যৌনবাহিত রোগ। তবে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এদের জন্য দায়ী। সিফিলিস রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া হলো Treponema palladium কিন্তু গনোরিয়া রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া হলো Neisseria gonorrhoeae. সিফিলিস রোগে যৌনাঙ্গে ব্যাথাহীন ক্ষত হলেও গনোরিয়া রোগে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, পুরুষের অন্ডকোষে ব্যাথা এবং নারীদের সহবাসের পর যোনিপথে রক্ত আসে। সিফিলিস রোগ নারীর চেয়ে পুরুষে বেশী হলেও গনোরিয়া নারী পুরুষ উভয়েই সমান হারে হয়।
সিফিলিসের ভেষজ চিকিৎসা
সিফিলিস যেহেতু একটি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন তাই এই রোগ সারাতে প্রয়োজন এন্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। প্রাকৃতিক অনেক ভেষজেই এন্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট বিদ্যমান যা দ্বারা সিফিলিস নিরাময় সম্ভব। তন্মধ্যে কিছু ভেষজের নাম হলো- নিম, হরিতকি, হলুদ, চিরতা, আমলকি, চিত্রক মূল, কুটকি প্রভৃতি। সিফিলিসের ঔষধ হিসাবে বাজারে পাওয়া যায় এমনি কিছু ঔষধ হলো- নিম ক্যাপসুলস, হারবাল ডেইলি হলদি, কারকামিন ক্যাপসুলস, গন্ধক রসায়ন, কালিহারি ভেজ ক্যাপসুল, চিরতা ভেজ ক্যাপসুল এবং সুধ শিলাজিৎ ভেজ ক্যাপসুল প্রভৃতি ( রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধ সেবন করবেন না)।
গর্ভবতী নারীদের সিফিলিস হলে শিশুটিকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়?
গর্ভবতী নারীদের সিফিলিস হলে মা এর সঠিক চিকিৎসার দ্বারা শিশুটিকে নিরাপদ রাখার জন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা হলো-
১.গর্ভবতী নারীর সিফিলিস নির্ণীত হবার সাথে সাথে এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা শুরু দিতে হবে তবে এন্টিবায়োটিকে এলার্জী থাকলে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ঔষধ গ্রহণ করতে হবে।
২. প্রসবের পূর্বে নিয়মিত সঠিক চিকিৎসা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা লাগবে।
৩.প্রসবের পর শিশুরও সিফিলিস টেস্ট করাতে হবে। যদি সিফিলিস থাকে তবে তাকেও এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।
৪.শিশুটিকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।
সর্বোপরি কথা হলো গর্ভবতী নারীর সঠিক চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমেই সন্তানকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।
Frequently Asked Questions (FAQs)
প্রশ্ন : সিফিলিস রোগটি মানুষের কোথায় হয় ?
উত্তর : নারী ও পুরুষের গোপন অঙ্গে সিফিলিসের সংক্রমণ হয়। যেমন : শিশ্ন, যোনি এবং পায়ুপথ।
প্রশ্ন : সিফিলিস রোগ কি ভালো হয়?
উত্তর : সিফিলিস রোগ খুব সহজ চিকিৎসায় প্রাথমিক পর্যায়েই পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব। তবে সময় যত বাড়বে চিকিৎসার মাত্রা তত বাড়তে থাকবে।
প্রশ্ন : সিফিলিস কি ছোঁয়াচে রোগ ?
উত্তর : হ্যা সিফিলিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। যৌন কার্যের দ্বারা ইহা একজন থেকে অপরজনে বিস্তার লাভ করে।
প্রশ্ন : গর্ভবতী নারীদের কি সিফিলিস টেস্ট করাতে হয় ?
উত্তর : হ্যা গর্ভবতী নারীদের সিফিলিস টেস্ট করা আবশ্যক। কেননা আপনি যদি সিফিলিস আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে তা আপনার নবজাতক সন্তানের শরীরেও বিস্তার লাভ করবে। যা আপনার সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিসাধন করতে পারে। যেমন: শিশু মৃত্যু, জন্ম ত্রুটি, ছানি, বধিরতা এবং খিঁচুনি ইত্যাদি।
প্রশ্ন : বিয়ের আগে কি সিফিলিস টেস্ট করাতে হয় ?
উত্তর : সিফিলিস একটি যৌনবাহিত রোগ। বিয়ের আগে এটি টো্ট করাতে হবে এটা বাধ্যতামূলক নয় তবে আপনারা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে থাকেন তবে দুজনে এবিষয়ে আলোচনা করতে পারেন এবং দুজনেই পৃথক ভাবে টেস্ট করাতে পারেন যা আপনাদের দাম্পত্য জীবনকে আরোও সুন্দর করে তুলবে। এর পাশাপাশি সিফিলিস রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার কমাবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ জীবনের নিশ্চয়তা দিবে।
Disclaimer :এ ওয়েবসাইটে দেওয়া সকল তথ্য শুধুমাত্র জানার জন্য। রোগীকে সরাসরি না দেখে এবং রোগীর পরীক্ষা না করে রোগ এবং রোগের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাবেন না। অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।