“এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া মানুষদের ভিড় বাড়ে। পাসপোর্টে ছাপ পড়ে। বাক্স প্যাঁটরা নিয়ে ইমিগ্রেশান পার করে মানুষ। এক সময়ে যে দেশটা নিজের দেশ ছিল সেটারই বেড়া টপকায়। প্রত্যেক বছর বৃষ্টি আসে নিয়ম করে দু দেশেই। তবুও সীমান্তের দাগ মুছে যায় না সেই জলে। ওটা ইন্দুবালার দাদুর স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়।” ইন্দুবালা ভাতের হোটেল উপন্যাসের একদম শেষের পৃষ্ঠায় এই লেখার ভাবার্থ বুঝতে হলেও পড়তে হবে এই অসাধারণ উপন্যাসটি।
” ইন্দুবালা ভাতের হোটেল “ঔপন্যাসিক কল্লোল লাহিড়ীর লেখা একটি উপন্যাস। এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো ইন্দুবালা।এই উপন্যাসে উঠে এসেছে ইন্দুবালার শৈশব থেকে কৈশোর এবং যৌবন থেকে বার্ধক্য জীবনের সব ইতিহাস। কিন্তু লেখক এই সব কিছু একটানা উপস্থাপন না করে টুকরো টুকরো ঘটনা দিয়ে সাজিয়েছেন এই উপন্যাস।
এই উপন্যাসে এপার বাঙলা ও ওপার বাঙলার একটি গভীর যোগসূত্র দেখানো হয়েছে। খুলনার কলাপোতা গ্রামের ছোট্টো মেয়ে ইন্দুর বিয়ে হয় কলকাতার দোজবরে মাতাল এক পুরুষের সঙ্গে। মেয়ে ভালো থাকবে বলে কলকাতায় বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলো ইন্দুর বাবা।পরে ইন্দু তার স্বামীর সংসারে এসে অভাব-অনটন দেখে বুঝতে পারে যে,নেহাৎ ভালো থাকার জন্য নয় বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যুদ্ধের হাত থেকে তার প্রাণ বাচাঁনোর জন্যই ইন্দুর বিয়ে দিয়েছিল তার বাবা।ঋণের বোঝায় জর্জরিত,স্বামীর অত্যাচার ও নানা অভাব-অনটনেই দিন কাটতে থাকে ইন্দুর।তিন সন্তান নিয়ে অল্পকালেই বিধবা হওয়ার পরই শুরু হয় ইন্দুর আসল জীবন যুদ্ধ। আর তা হলো বেঁচে থাকার লড়াই, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।ইন্দুবালা তৈরি করে করে তার ভাতের হোটেল। ইন্দুবালার হতের রান্না ছিলো বড়োই সুস্বাদু। তার রান্না সবাই চেটেপুটে খেতো। এছাড়াও এই উপন্যাসে রয়েছে হারানো প্রেমের গল্প, অপেক্ষার প্রহর গুনা,কাছের মানুষ হারানোর বেদনা,এক সাহসী নারীর সমাজে টিকে থাকা সহ আরও নানা রকম বিষয়ের চমৎকার ব্যাখ্যা।
ইন্দুবালা নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলেছিলো।নিজের জীবন নিজে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে ইন্দুবালা ভাতের হোটেল কিভাবে প্রতিষ্ঠা পেল, কিভাবে সবার প্রিয় ও পছন্দের হয়ে উঠল তার কারণ জানতে হলে পড়তে হবে ” ইন্দুবালা ভাতের হোটেল “।
Reviews
There are no reviews yet.